Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.
রোজা সামনে রেখে দফায় দফায় বাড়া পেঁয়াজের দাম আবার কমতে শুরু করেছে। দু’দিনে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। রোজা কেন্দ্রিক বিক্রির পর চাহিদা কমায় পেঁয়াজের এমন দাম কমেছে বলে মনে করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
তাদের মতে, রোজা সামনে রেখে গত সপ্তাহে পেঁয়াজের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে দামও বেড়ে যায়। ৪০ টাকার পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। তবে চাহিদা কমায় এখন আবার পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা পর্যন্ত নেমেছে।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। যা রোজার শুরুতে ছিল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। অবশ্য রোজা কেন্দ্রিক দাম বাড়ার আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
পেঁয়াজের এই দাম বাড়া-কমার খেলা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত রফতানি বন্ধ করলে দেশের বাজারে হু হু করে দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা আর এক’শ টাকার নিচে নামেনি।
তবে চলতি বছরের মার্চের শুরুতে রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত। ভারত রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর দেশের বাজারে দফায় দফায় কমতে থাকে পেঁয়াজের কেজি। কয়েক দফা দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে।
কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবার বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে ভোক্তা অধিদফতর ও র্যাব। পেঁয়াজের বাজারে চলে একের পর এক অভিযান। এতে আবারও দফায় দফায় দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে।
তবে রোজার আগে আবারও অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। রোজাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু রোজা কেন্দ্রিক বিক্রি শেষ হতেই আবর দাম কমতে শুরু করেছে এ নিত্যপণ্যটির।
মালিবাগ হাজীপাড়া বৌ-বাজার থেকে পেঁয়াজ কেনা হেদায়েত বলেন, করোনার শুরুতে কেনা পেঁয়াজ ফুরিয়ে যাওয়ায় রোজার আগের দিন বাজারে এসেছিলাম। কিন্তু ওই দিন কোনো ব্যবসায়ী ৬০ টাকার কেজির নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করতে চায়নি। তাই অল্প পেঁয়াজ কিনে ফিরে গিয়েছিলাম। আজ বাজারে এসে দেখি ৪৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তাই ৫ কেজি কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রোজার আগে হুট করে দাম বেড়ে গেল। এখন আবার দাম কমে গেছে। কী এমন হল যে এক সপ্তাহের মধ্যে এমন দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটবে। এতেই বোঝা যায় পেঁয়াজের দাম কারসাজি করে বাড়ানো হয়েছে। রোজাকে হাতিয়ার করে এই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন বিক্রি কমায় দামও কমে গেছে।
বাজারটির ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পেঁয়াজের হুটহাট দাম বাড়া-কমার কারণে আমরাও বিপদে পড়ে যাই। রোজার আগে ৫৫ টাকা কেজি কেনা আমার এক বস্তা পেঁয়াজ রয়েছে। এই পেঁয়াজ এখন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আর নতুন আনা পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়া-কমা নির্ভর করে পাইকারদের ওপর। শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালে খুচরাতেও দাম বেড়ে যায়। আবার ওরা দাম কমালে আমাদেরও কম দামে বিক্রি করতে হয়। খুচরায় প্রতিযোগীতার সংখ্যা অনেক। ক্রেতা ৪৫-৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজ পেলে ৬০ টাকা দিয়ে কিনবে কেন? তাই লোকসান হলেও পাইকারিতে দাম কমলে, আমাদের দাম কমিয়ে বিক্রি করতে হয়।
এদিকে রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। রোজার আগে এখানকার ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে আয়নাল বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে ব্যবসা করছি। রোজায় পেঁয়াজের দাম বাড়ে, কিন্তু কমতে দেখিনি। এবার রোজার শুরুতেই পেঁয়াজের দাম কমার ঘটনা ঘটল। এর কারণ হতে পারে এবার দোকানের ইফতার বিক্রি হচ্ছে না। ফলে পেঁয়াজের চাহিদা কম। আবার যারা বাসায় ইফতারি তৈরি করেন তারা রোজার আগেই পেঁয়াজ কিনে রেখেছেন। ফলে এখন চাহিদা কমেছে, তাই দামও কমছে।
রামপুরা মোল্লাবাড়িতে ভ্যানে করে পেঁয়াজ বিক্রি করা আজম বলেন, গত সপ্তাহেও এক কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা বিক্রি করেছি। ওই সময় বিক্রিও হয়েছে অনেক ভালো। রোজার আগের এক সপ্তাহ প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এখন ৪৫ টাকা কেজি হলেও বিক্রি তেমন হচ্ছে না।
ভ্যানটি থেকে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কেনা আমেনা বেগম বলেন, রোজার আগে দুই কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৬০ টাকা করে। সেই পেঁয়াজ এখনো আছে। কিন্তু এখন ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়ায় আরও ৫ কেজি কিনেছি। বলাতো যায় না, কখন আবার দাম বেড়ে যায়।
Leave a Reply